বাগেরহাটের চিতলমারীতে বসত বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের বর্ণনা দেওয়া গৃহবধুকে হত্যা||খুলনার খবর২৪
খুলনার খবর২৪|| বাগেরহাটের চিতলমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুটি বসত বাড়ি ভাংচুর, লুটপাটের বর্ণনা দেওয়া গৃহবধু ইতি বেগম (২০) কে গলা কেটে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা।এ ঘটনা নিখোঁজ রয়েছে নিহত ইতি বেগমের ভাসুরের ছেলে সাগর ইসলাম( ১৪)।
গতকাল বুধবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কুনিয়া গ্রামে স্বামীর ঘরে তার জবাইকরা মরদেহ পাওয়া যায়।ইতি বেগম কুনিয়া গ্রামের সদর আলী মীরের ছেলে জাহিদুল মীরের স্ত্রী। মাত্র দুই মাস আগে ইতির বিয়ে হয়েছিল। এর আগে চুরির অপবাদ দিয়ে গত সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সদর আলী মীরের দুটি বসত বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও বাড়িতে থাকা নারীদের মারধর করে প্রতিপক্ষরা।
বিষয়টি ৯৯৯ ফোন করে জানালেও কোন প্রতিকার পায়নি পরিবারটি। পুলিশ ঘুরে যাওয়ার পরেও ওই পরিবারের গরু, ছাগল, হাস-মুরগি, কবুতরসহ সবকিছু লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষরা এমন অভিযোগ করেছে পরিবারের লোকেরা।বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দেওয়ার পরে গত মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) রাতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে চিতলমারী থানায় মামলা দায়ের করেন সদর আলীর আরেক পুত্রবধু সানজিদা বেগম। সানজিদা বেগম বলেন, ইকবাল, সফিক ও ফেরদৌস আলমের নেতৃত্বে আমাদের বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর করে।স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ সিন্দুক, ৮টি গরু, ১০ টি ছাগল, শতাধিক কবুতরসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক মালামাল লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এরপর থেকে হামলাকারীরা হুমকী ধামকী দিয়ে আসছিল।
মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা দায়েরের পর আসামীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার দেবরের স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমার ভাসুরের ছেলে সাগরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
নিহত ইতি বেগমের ননদ সৈয়দা সুলতানা বেগম জানান, সোমবার দুপুরে আমাদের বাড়িতে হামলা করে হামলা ও ভাংচুর করে ইকবাল, সফিক ও ফেরদৌস আলমের নেতৃত্বে এলাকার ২৫-৩০ জন যুবক।আমাদের বাড়িতে থাকা ভাইপো ও ভাইয়ের বউয়ের মুখে হামলার ঘটনা শুনে আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেই। ৯৯৯ স্থানীয় থানা পুলিশের সাথে কানেক্ট করিয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও সন্দেহজনক কারণে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক বলেন, ইতি খানম ও তার ভাসুরের ছেলে সাগর ইসলাম বাড়িতে ছিল। রাতের কোন একসময় ইতিবেগমকে জবাই করে হত্যা করা হয়। দুপুরে আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি।
পুলিশ বলছে, ওই পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় বেশকিছু চুরির মামলা রয়েছে। তাই এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওই হামলা করে বলে দাবি করেন তিনি।
নিহত ইতি বেগম মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দুপুরে হঠাৎ করে ইকবাল, সফিক ও ফেরদৌস আলমের নেতৃত্বে এলাকার ২৫-৩০ জন যুবক আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে থাকা সকলকে এলোপাথাড়ি মারপিট শুরু করে।আমার দুই ভাসুর মিজানুর ইসলাম ও আমিনুর ইসলাম প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। তারা আমাদের ঘরের মধ্যে থাকা সবকিছু ভাংচুর করে। আমরা চিৎকার শুরু করলে আমার জা সানজিদা বেগমের গলায় ছুরি ধরে তার কোল থেকে ১৮ মাসের বাচ্চা নিয়ে যায়।বাচ্চার গলায়ও ছুরি ধরে বলে চিৎকার করলে মেরে ফেলব। প্রায় দুই ঘন্টা তান্ডব চালিয়ে তারা লোহার সিন্দুকে রাখা ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ সব কিছু নিয়ে চলে যায়। এতে আমাদের প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.