Header Ads

  • শিরোনাম সর্বশেষ

    দুই কর্মহীন মানুষের দূর্দশার আত্মকাহিনী || খুলনার খবর২৪


    খুলনার খবর২৪||শরিফুল ইসলাম||আট বছর ধরে পরিবহনের হেলপার হিসাবে কাজ করছেন মোঃ আজাহারুল ইসলাম (৩৮)।বাড়ি যশোর জেলার কেশবপুর থানায়। মা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন টিনের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট ঘরে। মাসে যে আয় ছিল, তাতে খুব আয়েশে দিন না কাটলেও মুখে হাসি ছিল, সংসারে সুখ ছিল। পরিবারের সেই হাসিমাখা মুখ মলিন করে দিয়েছে করোনাভাইরাস।

    অদৃশ্য ভাইরাস করোনার প্রভাবে প্রায় তিন মাস ধরে কর্মহীন আজাহার। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে চেয়ে চিন্তে আর ধার-দেনা করে কোনোমতে টিমটিম করে চলছে সংসার। কাজ নেই, জমানো টাকা নেই, বাড়ছে দেনা সব মিলিয়ে অনেকটা দিশেহারা তিনি।

    দেশে সাধারণ ছুটি শেষের পর দ্বিতীয়বারের মতো কাজে বের হয়েছিলেন আজাহারুল। নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে গাড়ি ধোয়ার কাজ করার সময় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। জানালেন, আদি বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। সেখান থেকে কাজের তাগিদে খুলনা আসেন। এরপর দেখতে দেখতে আট বছর পার করেছেন পরিবহন সেক্টরে।

    আজাহার বলেন, করোনার আগে মাসে ১৩-১৪ হাজার টাকা আয় হইতো। ভালোভাবেই চলে যেতো। ভাইরাস আসার পর থেকেই গন পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভীষণ কষ্টে পড়েছি। গত দুই মাস ধরে শুধু শাক-সবজি ও ডাল-ভাত খাইয়ে আছি। কোনোদিন ভালো মাছ-মাংস কিনিনি। মাঝে মাঝে না খাইয়েও থাকতে হইছে।মাঝে মাঝে বাচ্চাদের দিকে তাকালে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।মুরব্বিদের কাছে ৭৪ সালের অভাবের কথা শুনেছি। এখন বোধহয় তাঁর চেয়ে বেশি খারাপ সময় যাচ্ছে।কি করে বেঁচে থাকবো সেটাই এখন দেখার বিষয়।


    অপর একজন মোঃ কামরুজ্জামান (৩৬),২০১৩ সালে বিয়ে করেছেন।থাকেন সোনাডাঙ্গা খোড়াবস্তিতে। দুই সন্তান ছিলো তাঁর।দুই সন্তানের মধ্যে একজন মারা গেছেন।অপরজনের বয়স ৩ বছর।কামরুজ্জামান বলছিলেন,৫ বছর ধরে আখের রস বিক্রি করি।এখন এই ভাইরাসের কারনে সেটাও বন্ধ।এখন যদিও একটু আধটু রস বিক্রি করি কিন্তু মানুষে ভাইরাসের ভয়ে এখন আর রস খায়না।বাচ্চার মুখে খাবার তুলে দিতে খুব কস্ট করতে হয়।

    এবারের ঈদটাও ভীষণ খারাপ কেটেছে। নিজ থেকে সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বললেন, এ রকম খারাপ ঈদ আগে কখনো কাটেনি। একটা সুতো পর্যন্ত কিনতে পারেননি। আর স্ত্রী ঘরে থাকা কাপড় দিয়েই বাচ্চাকে জামা বানিয়ে দিয়েছেন।

    করোনা তো সারা দুনিয়া থামিয়ে দিয়ে গেল। জীবন চলে না। জীবিকা শেষ। সামনে কী হবে, চিন্তায় মাথা কাজ করে না। মনে করেছিলাম লকডাউনের পর থেকে কাজ–কাম হবে।

    কর্মহীন হওয়ার পর থেকে আত্মীয়-স্বজন কারও কাছ থেকে কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি বলে জানালেন কামরুজ্জামান। ধার-দেনা করেই সংসার চালাতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ধারের টাকা শোধ করার মতো অবস্থা নেই এখন। আর মানুষের কাছেই বা কতবার চাওয়া যায়।

    প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আড়াই হাজার টাকা বা সরকারি অন্য সহায়তা পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। তবে সেখানেও তিনি ব্যর্থ। বললেন, ভোটার আইডি কার্ড জমা দিয়েছি দুই তিনবার। তবে কিছু পাইনি। অনেক বড়লোকও পেয়েছে। তবে আমরা পাইনি।

    No comments

    please do not enter any spam link in the comment box.

    click here



    Post Bottom Ad