আম্ফানের বছর পূর্তি: সাতক্ষীরা উপকূলে জলবায়ু অবরোধ-খুলনার খবর
পরিতোষ কুমার,মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি|| প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দীর্ঘ এক বছর পার হলেও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। লবনাক্ততার তীব্রতায় কৃষিকাজ হয়না, বিধায় তীব্র অভাবগ্রস্থ অধিকাংশ মানুষ। বেড়ীবাঁধ ভাঙ্গনের আতঙ্কে তটস্থ থাকতে হয় সবসময়। যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে বিচ্ছিন্ন। চিকিৎসা, স্যানিটেশন, সুপেয় পানি-সহ বিভিন্ন সংকটে বিপর্যস্থ উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ মে) সকাল ৮টায় সুপার সাইক্লোন আম্ফানের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কার, সুপেয় পানি ও উপকূল সুরক্ষার দাবিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চৌদ্দরশি ব্রিজ ও নৌকার ওপর ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে ‘জলবায়ু অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করেছে উপকূলবাসী।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, বাংলাদশে মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্ট ও কোস্টাল ইয়ুথ একশন হাব এর ব্যানারে এবং স্থানীয় গাবুরা আইডিয়াল ক্লাব, সানমুন স্টার সোশ্যাল ক্লাব, ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইট ও স্টুডেন্ট কেয়ার সোসাইটির বাস্তবায়নে এই কর্মসূচী পালিত হয়।
সমাবেশ থেকে জলবায়ু সুবিচার ও উপকূলবাসীর স্বার্থ সুরক্ষায় অতিদ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার ও সুপেয় পানির সরবরাহের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, দূর্যোগের সময় কতৃপক্ষ ও মিডিয়া তৎপর থাকে। আমরা আশ্বাস পাই, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেই তৎপরতা আর থাকে না। স্বাভাবিক সময়েও যে উপকূলের মানুষের জীবন কতটা অস্বাভাবিক থাকে- এটা কেউ দেখে না। আজ আম্ফানের দীর্ঘ ১ বছর পরেও উপকূলের শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। বারবার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সবসময় আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। আমরা ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই।
ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সাবেক সভাপতি ইয়াছির আরাফাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্টুডেন্ট কেয়ার সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইসরাফিল হুসাইন, ইনফরমেশন কোয়েস্ট সেন্টারের সভাপতি তাসনিমুল এহসান ফাহাদ, সানমুন স্টান সোশ্যাল ক্লাবের মুতাছিম বিল্লাহ, ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সাতক্ষীরা জেলা সমন্বয়ক এসএম শাহিন আলম, রাইসুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ, ডিকে শরিফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহতারাম বিল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয় গোটা সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়ে উপকূলীয় এলাকার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ঘর-বাড়ি ধ্বসে পড়ে ২ হাজারেরও বেশি। এখনো ডুবে আছে শতাধিক ঘর-বাড়ি। কাজ না থাকায় সেখানকার লোকজন বর্তমানে বেকার হয়ে পড়েছেন। আম্ফানের এক বছর পার হলেও উপকুলীয় এলাকায় গৃহহীনের সংখ্যা এখনও দুই শতাধিক। বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর খুপড়ী ঘরে তাদের বসবাস।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.