অভয়নগরে গণকবর ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ
ক্ষতবিক্ষত মরদেহ নওয়াপাড়া রেল স্টেশনের পাশে একটি গর্তে ফেলে মাটিচাপা দিয়েছিল পাক সেনারা। আজও সেই মৃত মানুষগুলোর সংখ্যা সকলের কাছে অজানা রয়েছে।
১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখি আক্রমণে পাক বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত ভেবে অভয়নগর থেকে পালিয়ে গিয়েছিল খুলনার ফুলতলা উপজেলায়।
দীর্ঘদিন অযত্ন অবহেলায় মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা সেই মরদেহের দেহাবশেষ সংরক্ষণ করে গণকবর ও শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছিলেন একজন ব্যক্তি। সেই উদ্যোক্তা ব্যক্তি বর্তমান অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব এনামুল হক বাবুল। তাঁর হাতে গড়া সেই গণকবর ও শহীদ স্মৃতিসৌধে অভয়নগরের লাখো মানুষ প্রতি বছরের ৯, ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বরসহ ২৬ মার্চে শ্রদ্ধা নিবেদন অব্যাহত রেখেছেন। একান্ত সাক্ষাৎকারে আলহাজ্ব এনামুল হক বাবুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু করতে পারা গর্বের বিষয়। আমার বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালিন সভাপতি। সেই কথা চিন্তা করে শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখার স্বার্থে ২০০৯ সালে গণবকর ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। তৎকালিন সময় নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র থাকার সুবাদে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল।
তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কয়েকজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করতে হয়েছিল। তাদের অনুমোতি পাওয়ার পর বর্তমান নওয়াপাড়া রেল স্টেশনের নতুন প্লাটফর্মের পাশে সেই মাটিচাপা দেওয়া শহীদদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে উদ্ধার করা দেহাবশেষ রেল স্টেশন সংলগ্ন নওয়াপাড়া পৌরসভার বাইপাস সড়কের পাশে ধর্মীয় প্রথা মেনে কবর দেওয়ার মধ্য দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
নির্মাণ করা হয়েছিল গণকবর এবং কবরের সঙ্গে লাল-কালো রঙের স্মৃতিসৌধ। তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রজন্মের কাছে অজানা রয়েছে অভয়নগরের গণকবর ও শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের ইতিহাস। তারা হইতো জানেনা গণকবর ও স্মৃতিসৌধের ডিজাইন বা নকশা করেছিলেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য স্থপতি (আর্কিটেক্ট) রুহুল আমিন।
তৎকালিন সময় এর নির্মাণ ব্যয় হয়েছিল আনুমানিক ৮ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করতে পারা আত্মতৃপ্তি ও গর্বের বিষয়।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.