প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস গড়া জয় বাংলাদেশের
খুলনার খবর// এই প্রথম নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জিতল টাইগাররা।আগের ১০ দেখায় একবারও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যবধানটাও থাকল বেশ বড়। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টস করতে যখন নামলেন, তখনো হয়তো আনমনে ভাবছেন, দলের একজন অভিজ্ঞ সেনানীকে ছাড়াই বিশ্বকাপের মতো যুদ্ধের ময়দানে নামতে হবে তাকে।তবে সে সব ভাবনার প্রভাব পড়ল না মাঠের পারফরম্যান্সে। নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে হারাল টাইগাররা।
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ফিল্ডিং করতে নেমে বাজিমাত স্বাগতিক বোলারদের। সাকিব আল হাসান, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমানদের বোলিং তোপে লজ্জায় পড়তে হলো নিউজিল্যান্ড দলকে। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কিউইদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ছিল ৬০ রান। আজ সেই দৃশ্যের পুরনাবৃত্তি ঘটল। সমান ৬০ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি বাংলাদেশ দলেরও। তবে জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিকদের। ৩ উইকেট হারিয়ে ৩০ বল বাকি রেখেই জিতে যায় বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। লিটন দাস ফিরেও সুবিধা করেত পারেননি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই দলীয় ১ রানের মাথায় নিজেও ১ রান করে ফেরেন নাঈম শেখ। একই পথে হাঁটেন লিটনও। তার ব্যাট থেকেও আসে ১ রান। ইনিংসের শুরুতেই যখন ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে স্বাগতিক শিবির, তখন দলের ত্রাতা হয়ে আসেন সাকিব। মন্থর উইকেটেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলেন।
তৃতীয় উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে সাকিবের ৩৬ রানের জুটি জয়ের ভিত গড়ে দেয়। তবে দলীয় ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৩৭ রান। তার আগেই ফিরে যান সাকিব, অভিষিক্ত রাচিন রাবীন্দ্রর বলে টম লাথামের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এতে শেষ হয় তার ৩৩ বলে ২৫ রানের লড়াকু ইনিংস।
সাকিব আউট হলেও মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলের জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছেদ্য জুটি থেকে আসে ২৫ রান। এতে ৩০ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল। মুশফিক ২৬ বলে ১৬ আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২২ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
স্পিনারদের করা প্রথম ৫ ওভারে ১০ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৪ উইকেট। দলীয় ৭ রানে উইল ইয়াং ৫ রানে ব্যাট করার সময় সাকিবের বেশ বাইরের নিচু হওয়া বল টেনে আনেন স্টাম্পে। নাসুমের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ১ রানের ব্যবধানে ফেরেন কলিন ডি গ্রান্ডহোম (১) ও টম ব্লান্ডেল (২)। ৬ষ্ঠ ওভারে আক্রমণে আসা মুস্তাফিজুর রহমান ৮ রান খরচ করলে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে কিউদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮ রান।
৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক টম লাথাম ও হেনরি নিকোলস যোগ করেন ৩৪ রান। তবে সাইফউদ্দিনের শর্ট বলে পুল খেলতে গিয়ে লাথাম ফাইন লেগে ক্যাচ দেন নাসুমকে। ২৫ বলে ১৮ রান করে আউট হন তিনি। সাকিবের করা পরের ওভারেই অভিষিক্ত কোল ম্যাককোনক ফেরেন শূন্য হাতে। ফলে নিউজিল্যান্ডের দুই অভিষিক্তই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
ক্রিজে থিতু হয়ে ফিরেছেন হেনরি নিকোলসও (১৮), ৪৯ রানে ৭ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরপর নিজের দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে সফরকারীদের শেষ ৩ উইকেট নিজের পকেটে ঢোকান মুস্তাফিজ। তাতে ৬০ রানেই থামতে হয় কিউইদের।
১৩ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট মুস্তাফিজের। ৪ ওভারে ১০ রান খরচায় সাকিবের শিকার ২টি। সাইফউদ্দিন ও নাসুমও তুলে নেন ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-নিউজিল্যান্ড: ১৬.৫ ওভারে ৬০/১০ (ব্লান্ডেল ২, রবীন্দ্র ০, ইয়াং ৫, ডি গ্র্যান্ডহোম ১, ল্যাথাম ১৮, নিকোলস ১৮, ম্যাকনকি ০, ব্রেসওয়েল ৫, এজাজ ৩, টিকনার ৩*, ডাফি ৩; মেহেদি ১/১৫, নাসুম ২/৫, সাকিব ২/১০, মুস্তাফিজ ৩/১৩, সাইফ ২/৭)।
বাংলাদেশ : ১৫ ওভারে ৬২/৩ (নাঈম ১, লিটন ১, সাকিব ২৫, মুশফিক ১৬*, মাহমুদউল্লাহ ১৪*; এজাজ ৪-০-৭-১, ম্যাকনকি ১/১৯, রবীন্দ্র ১/২১)।
ফল: ৭ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ, ম্যাচসেরা : সাকিব আল হাসান
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.