দুর্ভোগের মধ্যে দিন পার করছেন সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার বানভাসি লক্ষাধিক মানুষ||
খুলনার খবর২৪||অভাবনীয় ও অবর্ননীয় দুর্ভোগের মধ্যে দিন পার করছেন সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার বানভাসি লক্ষাধিক মানুষ। প্রবল জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আশাশুনি সদরের (আংশিক) ও শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের (আংশিক) অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছ। নদীতে ভাটার সময় পানি কমে গেলেও জোয়ারের সময় প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে বাঁধভাঙা স্থান দিয়ে। বাঁধের কাছাকাছি মাটি বালি না থাকায় তা সংস্কার করাও যাচ্ছে না। এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি।
গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০টি পয়েন্টে সাড়ে ৫৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায়। ওই সময় বেশকিছু স্থানে রিং বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হলেও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা ও কুড়িকাউনিয়া এবং শ্রীউলা ইউনয়নের হাজরাখালী পয়েন্টে বেঁড়িবাধ ভেঙে এতই গভীর হয়ে যায় যা সংস্কার করা এতদিন সম্ভব হয়নি।
এরফলে গত তিন মাস ধরে ওই এলাকার লোকালয়ে চলে জোয়ার-ভাটা। তার ওপর বর্তমান অমাবশ্যার গোনে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২/৩ দিনের জোয়ারে ও প্রবল বর্ষণে যে সমস্ত এলাকায় রিংবাঁধ দিয়ে পানি বন্ধ করা হয়েছিল সেগুলো আবারো ছুটে যায়। এর ফলে জোয়ার-ভাটা বইছে লোকালয়ে ও বাড়ির উঠানে। মানবেতর জীবন যাপন করছেন লক্ষাধিক মানুষ।রান্না,খাওয়াসহ দুর্গত এলাকায় ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দুর্গতরা। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব। অনেকেই এখন বাড়িঘর ছেড়ে শহরের দিকে ছুটছেন।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, ইতিমধ্যে দুর্গতদের জন্য ২০০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।দুর্গত এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কারে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বর্ষা মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ করা সম্ভব হবে না। তবে এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে বিকল্প রিংবাঁধ দিয়ে পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে।তবে ইতোমধ্যে পানিবন্দি এলাকার মানুষের পাশে সরকার আছে। ত্রাণ সহায়তাসহ তাদের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করছে সরকার।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.