নিয়মের তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস||নেই লাইসেন্স,বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
খুলনার খবর২৪||খুলনা জেলায় ও মহানগরীতে ব্যাঙের ছাতার মতো এলপি গ্যাস বিক্রির প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। লাইসেন্স না নিয়েই মুদি দোকান, সাইকেল গ্যারেজ, পানের দোকান, তুষ-কাঠের দোকান, ক্রোকারিজের দোকান, রড-সিমেন্টের দোকান, ফ্লেক্সিলোড ও ফটোকপির দোকান, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকানে অবৈধভাবে এলপি গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। অনভিজ্ঞ ও লাইসেন্সবিহীন এসব গ্যাসের দোকানের কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্টেম্ফারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে গেছে অনেকখানি।এসব দোকানের বিরুদ্ধে নেই কোন সরকারী অভিযান।নেই কোন তদারকিও।
খুলনা এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী জুয়েল এন্টারপ্রাইজের মালিক বলেন, খুলনায় বিস্টেম্ফারক অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই কমপক্ষে ৪০০শর অধিক প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারীরা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি কিংবা এগুলো ব্যবহারের নিয়ম জানে না। ফলে ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।তিনি বলেন, কিছু লোক বিস্টেম্ফারক লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর প্রদান না করে এবং ডিলার লাইসেন্স না নিয়েই এলপি গ্যাস বিক্রি করছে। অবৈধ ব্যবসায়ীদের কারণে লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্টেম্ফারণও ঘটেছে। এ ছাড়াও অজ্ঞতা ও অসতর্কতাসহ বিভিন্ন কারণে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে ঝুঁকি বেড়েছে।
খুলনার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাড়া-মহল্লা, অলিগলির ছোট ছোট দোকান, খুচরা বাজারের দোকান, আবাসিক এলাকার দোকানগুলোতে যত্রতত্র ফেলে রেখে বিক্রি করছে এলপিজি সিলিন্ডার। এসব দোকানদার বেশিরভাগই বিস্ম্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স নেননি। তা ছাড়া তদারকির অভাবে ঝুঁকি জেনেও দোকানিরা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেশে সাধারণত উৎপাদনকারীর কারখানা থেকে ডিলাররা সিলিন্ডার ক্রয় করে। এরপর ডিলাররা খুচরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে এলপি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার পৌঁছায়। এক্ষেত্রে উৎপাদনকারীরা ডিলারদের কাছে সিলিন্ডার সরবরাহের ক্ষেত্রে বিস্টেম্ফারক পরিদপ্তরের সনদের বিষয়টি যাচাই করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। যদিও বিস্টেম্ফারক আইন ১৮৮৪-এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা-২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া অনধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদ করা যাবে। তবে বিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী, এসব সিলিন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। এলপিজি স্থাপনা প্রাঙ্গণে ধূমপান, দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। মজুদ করা স্থানের কাছে আলো বা তাপের উৎস থাকা চলবে না। কিন্তু এসব আইনের তোয়াক্কা না করেই সব রকমের দোকানেই বিক্রি হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার।
বিস্টেম্ফারক পরিদপ্তর থেকে জানা যায়, খুচরা দোকানে ১০টি সিলিন্ডার বিক্রি করতে পারবে। আর এর বেশি বিক্রি করতে হলে প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে বিস্টেম্ফারক পরিদপ্তরের লাইসেন্স নিতে হবে। সনদ ছাড়া ব্যবসা সম্পূর্ণ বেআইনি। বর্তমানে এলপিজি গ্যাস বিক্রির ক্ষেত্রে সারাদেশে ছয় হাজার সনদ আছে।সনদ না নিয়ে বিক্রি করলে বিষয়টি আইন অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসন দেখবে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.