খুলনা সিটি কর্পোরেশনের চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরের ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা
খুলনার খবর২৪||খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।গতকাল বুধবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে এ বাজেট ঘোষণা করেন।প্রস্তাবিত এ বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৬ কোটি ৯৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং সরকারি বরাদ্দ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা হতে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
বাজেট ঘোষণাকালে সিটি মেয়র বাজেটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে বলেন, বাজেটে এবারও নতুন কোন কর আরোপ করা হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সকল স্থাপনার উপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর্পোরেশনের আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এটি একটি উন্নয়নমুখী বাজেট। বাজেটে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিষ্কাশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নাগরিকসেবা সম্প্রসারণ, মশকনিধন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন, পার্ক, ধর্মীয় উপাসনালয়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, কেসিসি’র বিভিন্ন দপ্তর আধুনিকায়ন প্রযুক্তির আওতায় আনা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনার উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে পরিত্রাণ দেওয়ার নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা হবে। কেসিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। কেবল সরকারি বা বিদেশি সাহায্য ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না কেসিসি। নিজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
কেসিসি মেয়র জানান, কেসিসির নিজস্ব সংস্থাপন ব্যয় মিটিয়ে এবং ব্যয় সংকোচন করে রাজস্ব তহবিল হতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে মোট ৫১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের সাথে সাথে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মানববর্জ্য উন্নয়ন এবং মশক নিধনের জন্য কঞ্জারভেন্সি খাতে ৬ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।এডিপির জন্য থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭০ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। উক্ত বরাদ্দ হতে পূর্ত খাতে ৪২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায়িত্ব খুলনা ওয়াসার হলেও বিশেষ প্রয়োজনে জরুরি পানির চাহিদা মেটানোর জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপকে সাবমারসিবল পাম্পে রূপান্তর করার জন্য এখাতে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভেটেরিনারি খাতে ৫০ লাখ টাকা, জনস্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা, কঞ্জারভেসি খাতে ১৫ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভিন্ন দাতা সংস্থার ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং তিনটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এসব প্রকল্পে ২০২০-২০২১ অর্থ বছর ৮৭ কোটি ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার উন্নয়ন সহায়তা পাওয়ার আশা করা যায়। এডিপিতে দুইটি প্রকল্পে ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ঢাকা থেকে কেসিসির বাজেটে জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।
বাজেটে সভাপতিত্ব করেন কেসিসির অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর শেখ মোঃ গাউসুল আজম। এ সময় কেসিসির প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, কেসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.