অভয়নগরে আড়াই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে পেলেন ছেলেকে
ইসলাম মোল্যা বলেন, নওয়াপাড়া বাজারে আমার একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেই দোকানের উপর নির্ভর করে আমার সংসার চলে। সোমবার ঘটনার দিন সকালে আমি দোকানে ছিলাম। বেলা আনুমানিক ৩ টার সময় মোবাইল ফোনে জানতে পারি আমার একমাত্র ছেলে ইব্রাহিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত বাড়ি ফিরে গেলে আমাকে একটি চিঠি দেখানো হয়।
চিঠিতে আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা নিয়ে মাওয়া ঘাটে আসতে বলা হয়েছে। ঘটনাটি পুলিশকে জানালে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে চিঠিতে লেখা রয়েছে।
একমাত্র ছেলের মৃত্যুর ভয়ে আমি পুলিশকে না জানিয়ে ধারদেনা করে আড়াই লাখ টাকা জোগাড় করি। সন্ধ্যায় আমার স্ত্রী ও ছেলের মামা আবু সুফিয়ানকে চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মাওয়া ঘাটে পাঠিয়ে দেই।
ইব্রাহিমের মামা আবু সুফিয়ার বলেন, একমাত্র ভাগ্নেকে হারানোর ভয়ে পুলিশকে না জানিয়ে বোনকে সঙ্গে নিয়ে মাওয়া ঘাটে চলে যাই। রাত আনুমানিক ১০ টার সময় মাওয়া ঘাট সংলগ্ন একটি সড়কে আমাদেরকে আসতে বলা হয়। সেখানে পৌঁছালে একটি প্রাইভেটকার থেকে মাথায় হেলমেট পরা দুই ব্যক্তি আমাদের কাছে আসে এবং মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা দিতে বলে। অনেক কষ্টে আড়াই লাখ টাকা জোগাড় করা হয়েছে এমনটি জানালে তারা ওই টাকা নিয়ে প্রাইভেটকার থেকে ইব্রাহিমকে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
শিশু ইব্রাহিমের মা বিউটি বেগম জানান, সোমবার ঘটনার দিন আনুমানিক বেলা ১১ টার সময় বাড়ির উঠানে বসে আইসক্রিম খাচ্ছিল ইব্রাহিম। কিছুক্ষণ পর ইব্রাহিমকে উঠানে না পেয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজাখুজি শুরু করি। এরপর উঠানে একটি সাদা কাগজে লেখা চিঠি পাই।
চিঠি পাড়ার পর আমার জ্ঞান হারিয়ে যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় পাথালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এসআই শামছুর রহমান জানান, শিশু ইব্রাহিম অপহরণের বিষয়ে তেমন কিছু বলতে পারব না। ওই পরিবারের পক্ষ থেকে মৌখিক বা লিখিতভাবে কোন অভিযোগ করা হয়নি। সোমবার বিকালে ইসলাম মোল্যার বাড়িতে অনেক লোকজনের উপস্থিতির খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম।
বেনামে লেখা একটি চিঠি দেখালেও ইব্রাহিম অপহরণের বিষয়ে পরিস্কার করে কেউকিছু বলেনি বা অভিযোগ করেনি। তারপরও বিষয়টি অভয়নগর থানা ও বিভিন্ন ক্যাম্পে ফোন করে জানিয়ে নিজেই খোঁজাখুজি শুরু করি। রাতে জানতে পারি শিশু ইব্রাহিমকে তার পরিবার ফিরে পেয়েছে। অপহরণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছে এলাকাবাসী।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.