Header Ads

  • শিরোনাম সর্বশেষ

    অভয়নগরে সাংবাদিক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ, কথিত ধর্ষনকারী সাংবাদিক গ্রেফতার

    প্রনয় দাস,অভয়নগর উপজেলা প্রতিনিধি // অভয়নগরে দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে সাংবাদিকতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারন অতঃপর অর্ধলাখ টাকা চাঁদা দাবি : চাঁদার টাকা না দেয়ায় ভিডিও ফাঁস : ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা।


    যশোরের অভয়নগর উপজেলার বহুল আলোচিত চিটিংবাজ খ্যাত সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কথিত সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে চাঁদাবাজীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদার টাকা না পেয়ে মাহাবুব ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। সাংবাদিকতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেছে বলে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর পরিবার দাবি করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ কথিত সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান সহ অনিক বাঘা নামে অপর এক সহযোগিকে আটক করেছে।



    সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভয়নগর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নওয়াপাড়া এলাকা থেকে এ দুই লম্পট ও প্রতারককে আটক করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর মা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। যার অভয়নগর থানায় মামলা নং- ০৭, তাং- ০৭/০৯/২০২১ ইং। আটককৃতরা হলো অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া গ্রামের বাশার মোড়লের ছেলে মাহাবুবুর রহমান (৪০) ও গুয়াখোলা গ্রামের নাসির বাঘার ছেলে অনিক বাঘা (২৬)।


    মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর মা উল্লেখ করেন, তার মেয়ে নওয়াপাড়ার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেনির ছাত্রী ও সঙ্গীত শিল্পী। ছোট বেলা থেকে মেয়েটির সাংবাদিকতা করার শখ। এটা জানতে পেরে লম্পট মাহাবুব তাকে সাংবাকিতার কার্ড করে দেয়ার প্রলোভন দেখায় এবং তার নিকট থেকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও জন্মনিবন্ধনের কার্ড নেয়। এ সময় মাহবুব ওই শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি নেয়। প্রায়ই তার সাথে ফেসবুক মেসেঞ্জারে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে থাকে। হঠাৎ করেই মাহাবুব মেসেঞ্জারে ওই শিক্ষার্থীকে সাংবাদিকতার ফরম পূরণ করার জন্য তার বাড়িতে যেতে বলে। ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে যেতে রাজী না হওয়ায় ভীষন ব্যস্ততা দেখিয়ে তাকে চলিশিয়া গ্রামে তার ঘেরের বাসায় যেতে বলে। গত ২১ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বেলা দেড়টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রী সাংবাদিকতার ফরম পূরণের জন্য লম্পট মাহাবুবের ঘেরের বাসায় গেলে তাকে সেখানে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এবং ঘটনাটি কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ব্লাকমেইলিং করে তার সাথে অপকর্ম করতে বিভিন্ন স্থানে যেতে বলে। কিছুদিন পর মেয়েটিকে ভিডিও ডিলিট করার কথা বলে নওয়াপাড়া বাজারস্থ কাঁচাবাজারের পেছনের একটি স’মিলে নিয়ে অনিক বাঘার সহযোগিতায় পুণরায় ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মাহাবুব। এসময় সে ওই স্কুল ছাত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। মেয়েটি চাঁদার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার অশ্লিল ছবি ও ভিডিও মেয়েটির বাবা ও ছোট বোনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠায় এবং টাকা না দিলে ফেসবুকে ফাঁস করার হুমকি দেয়। বাদী তার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর মাহাবুবের সহযোগি অনিক বাঘা ০১৯৭৩-০৯৬৪৯৫ নম্বর থেকে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবাকে ফোন করে চাঁদার পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধের চাপ দেয়। অন্যথায় ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে ভুক্তভোগী অসহায় পরিবারটি অভয়নগর থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করে।


    পরে পুলিশ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে কথিত সাংবাদিক মাহাবুব ও তার সহযোগি অনিক বাঘাকে আটক করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মাহাবুবুর রহমান ও অনিক বাঘাকে আদালতে উপস্থাপনের জন্য যশোরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ কে এম শামিম হোসেন আটক ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। এবং সঠিক তদন্তপূর্বক আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য, মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার নাম ভাঙ্গিয়ে এবং নিজেকে বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রেয়েছে। এছাড়া অসংখ্য প্রতারণা ও চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া কমিউনিটি ব্যাংকিংয়ের ফাঁদ পেতে উপজেলার বহু অসহায় দরিদ্র মানুষকে পথে বসানোর অভিযোগ রয়েছে মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। নাম সর্বস্ব পত্রিকার কার্ড ব্যবহার করে সে উপজেলাব্যাপী এসকল অপকর্ম করার সুযোগ পেয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

    No comments

    please do not enter any spam link in the comment box.

    click here



    Post Bottom Ad