সাতক্ষীরার লাবসায় নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ
খুলনার খবর// গভীর রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের রাজনগরে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার নজরুল ইসলামের নির্বাচনী অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ, আগের রাতে ব্যালট কেটে বাক্স ভর্তি করার সূযোগ কমে যাওয়ায় প্রতিপক্ষরা যাতে বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে না পারে ও তাদের সক্রিয় কর্মীরা যাতে ভোটের দিন নির্বাচনী মাঠে না থাকতে পারে সে জন্য পরিকল্পিত হামলা, ভাঙচুর ও নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের নাটক সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সরদার জানান, আগামি ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য লাবসা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে ভোট করছেন। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে রাজনগর বাজারে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে কে বা কাহারা আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে নির্বাচনী অফিসে থাকা বঙ্গবন্ধুর ও শেখ হাসিনার ছবিসহ নৌকার ফেস্টুন ব্যানার পোস্টার, বস্তার বেড়া পুড়ে যায়। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুে নের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে।
এদিকে সদর উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের জানান, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। তাছাড়া এ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেও ব্যর্থ হন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান শাহনেওয়াজ। বর্তমানে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা কর্মীদের চেহারা দেখাই যায় না।এমন এক পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনা সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন জানান, এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম সরদার বুধবার সদর থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের নবীননগরের আব্দুস সাত্তার, আব্দুল হালিমসহ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, এ ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের সমর্থক নবীননগরের সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে গত রোববার সন্ধ্যায় ভোটের জন্য দোয়া চাইতে গেলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ও তার লোকজনদের পরিকল্পিতভাবে লাঞ্ছিত করে মা ও স্ত্রীকে মারতে যাওয়ার গল্প সাজিয়ে বেড়িবাঁধের উপর যেয়ে তাদের মোটর সাইকেল র্যালির গতিরোধ করা হয়েছে। অথচ সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানহানি করার চেষ্টা চালানো হয়েছে আব্দুল। নৌকার বাইরে ভোট চাইতে এলে হাত- পা কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। নৌকার বাইরে ভোট করা যাবে না মর্মে আব্দুল লতিফ ও পরান মণ্ডলের পৃথক দু’টি অঙ্গীকার নামা বাড়িতে বাড়িতে বিলি করা হচ্ছে। যদিও পরিকল্পিতভাবে আব্দুল লতিফ ও তার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার কথা অস্বীকার করেছেন মোজাম্মেল হক গাইন।
এদিকে গত ২৭ অক্টোবর প্রতীক পাওয়ার পর মোটর সাইকেলের র্যালি সহকারে বৈকারী ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে ফেরার সময় হামলা, মারপিট ও মোটর সাইকেল ভাঙচুরের শিকার হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা তরুণলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মোঃ মোস্তফা কামাল ও তার কর্মী সমর্থকরা। তাদেরকে নির্বাচনে মাঠ ছাড়া করতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আসাদুজ্জামান অসলে তাকেসহ ৮০জন নেতা কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা দেওয়া হয়েছে। নিরুপায় হয়ে তিনি আদালতে মামলা করেছেন। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবারের সদস্য ছাড়াও কর্মী সমর্থক অনেকেই বাড়িতে থাকতে পারছেন না।
কালীগঞ্জে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শ্যামলী রানী অধিকারীর বাড়ির সামনে বোমা ফাঁটানোর পর জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাফিয়া পারভিনের চাচাত ভাই এর মানিব্যাগ ফেলে রেখে সেখানেও একটি আতঙ্কিত পরিস্থিতি তৈরি করা হলেও পুলিশের ভূমিকার কারণে উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
এ ছাড়া সদরের ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর দিতে মিজান চেীধুরী সেয়ানে সেয়ানে লড়াই করায় নির্বাচনী মাঠ গরম রয়েছে। ভোমরা ইউনিয়নে জনপ্রিয়তা থাকা জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইসরাইল গাজীর সঙ্গে নৌকা প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলামের অসম প্রতিযোগিতাকে ঘিরে সাধারণ মানুষ নতুন কোন আতঙ্কের আশঙ্কা করছেন। তবে শহীদুল ইসলাম এ ধরণের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ভোটে তিনিই জিতবেন।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপি- জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দাবি করেন, আওয়ামী লীগের প্রতিটি নিবাচনী কার্যালয়ের পাশে সিসি টিভি ক্যামেরা বসালে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কমে যাবে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা।
জেলা নির্বাচন অফিসার নাজমুল করিম জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যে কোন ঘটনাকে যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.