দিঘলিয়ায় সাব-রেজিস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ,ধামাচাপা দিতে সংবাদ সম্মেলন
জানা গেছে, উপজেলার নগরঘাটস্থ ৬ একর মালিকানা জমির মালিক ঢাকায় বসবাসকারি এমএ কাশেম এবং নুর এ কাদের সেই জমির কিছু অংশ দিঘলিয়ার এনামুল হক ও দেয়াড়া গ্রামের মোঃ কাইউম ক্রয় করেন। সে কারণে বিক্রিত জমির কমিশন রেজিস্ট্টি করার প্রয়োজন দেখা দেয়।
কমিশন রেজিস্ট্রি করার জন্য ক্রেতা এনামুল ও মোঃ কাইউম এবং তাদের এক বন্ধু সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রারানী বাড়ৈর সাথে যোগাযোগ করেন। উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রারানী বাড়ৈ জমিটি কমিশন রেজিস্ট্টির জন্য সরকারি খরচ মোতাবেক ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ব্যাংক পে-অর্ডার গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রদান করেন। এ সময় সাব-রেজিস্ট্রার ঢাকায় যেয়ে কমিশন রেজিস্ট্রি করতে সরকারি খরচ বাদে আরো ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। ক্রেতা ও সাব-রেজিস্ট্রারের মধ্যে দরকষাকষির এক পর্যায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টায় ৪ লাখ টাকা এবং ঢাকায় যাওয়া আসার জন্য ৬ টি বিমান টিকেট প্রদান করেন জমির ক্রেতাগণ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রারানী বাড়ৈ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবিশ তসলিম রেজা শাকিল এবং শুভ্রারানী বাড়ৈর স্বামী প্রহলাদ দেবনাথ ঢাকায় যান। এ সময় তারা আরো ১ লাখ টাকা দাবী করেন। দাবীকৃত টাকা না দিলে জমি কমিশন রেজিস্ট্রি করা হবে না বলে ক্রেতাদের জানিয়ে দেন। এক পর্যায়ে জমির কমিশন রেজিস্ট্রি না করে ওইদিন সন্ধ্যা ৬ টায় বিমানে করে সাব-রেজিস্ট্রার তার লোকজন নিয়ে খুলনায় চলে আসেন। এ ঘটমায় ভুক্তভোগী ক্রেতা এনামুল হক মোঃ কাইউম ও তাদের বন্ধু মোঃ মুরাদ হোসেন তাদের দেয়া ৪ লাখ টাকা জমির কাগজপত্র ফেরত চাইলে শুভ্রারানী বাড়ৈ ২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকী ২ লাখ টাকা ও জমির কাগজপত্র ফেরত দিতে গড়িমশি করেন। একাধিকবার ভুক্তভোগীগণ শুভ্রারানীর কাছে ধর্না দিলেও ২ লাখ টাকা ও কাগজপত্র ফেরৎ না পেয়ে তারা জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে মৌখিক এবং খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবর শুভ্রারানীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়টি তনন্তাধীন রয়েছে। এর মধ্যে নিজের অনিয়ম ধামাচাপা দিতে সাব-রেজিস্ট্রার উপজেলার কিছু দলিল লেখকদের দিয়ে বুধবার কথিত সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফরিদ আহমেদ টুটুল।
সংবাদ সন্মেলনে মোড়ল মফিজুর রহমান মোঃ আনিসুর রহমান রাজু কুমার সেনসহ আরো কয়েকজন দলিল লেখক উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সন্মেলনে তারা সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রারানী বাড়ৈকে নির্দোষ এবং একজন সৎ কর্মকর্তা বলে দাবী করেন। অন্যদিকে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারি খরচ বাদেও লাখে ৫'শ টাকা করে সাব-রেজিস্ট্রারকে ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মুরাদ হোসেন। তিনি জানান, দলিল রেজিস্ট্রি করতে দলিল লেখকদের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রারকে লাখে ৫'শ টাকা করে প্রদান করতে হয়। এ বিষয়ে টুটুল মফিজ রাজুসহ অনেক দলিল লেখকদের সাথে ক্রেতাদের কল রেকর্ড তার সংগ্রহে আছে বলে তিনি জানান। যার কারণে দলিল লেখকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। অনেকে এ সংবাদ সন্মেলমকে সাজানো কাহিনী বলেও মন্তব্য করেছে। ভুতভোগী এনামুল হক, মোঃ কাইউম ও মুরাদ হোসেন দুদকের মধ্যমে বিষয়টি তদত করার দাবী জানিয়েছেন।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.