অভয়নগরে মেম্বর উত্তম হত্যাকাণ্ডের জট খুলতে শুরু করেছে, ৮ জন আটক, গুলি উদ্ধার
এছাড়া তিনটি তাজা গুলিও উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, নিহত উত্তম মেম্বর নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য চরমপন্থী এক নেতার সাথে ১ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়। অগ্রিম ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। কথা ছিল বাকী টাকা নির্বাচনের পর দেয়া হবে।
কিন্তু নির্বাচনে উত্তম মেম্বর বিজয়ী হওয়ার পর চুক্তিবদ্ধের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করে। সে জানায় ভোটারদের জনপ্রিয়তায় বিজীয় হয়েছে, তাই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এনিয়ে দ্বন্দে জড়ায় দুই পক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, চুক্তি অনুযায়ী টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে একাধিক টীম তদন্তে মাঠে রয়েছে। তাই তদন্তের স্বার্থে কিছুই বলা যাবেনা। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে খুনের ঘটনা জানানো হবে। এদিকে আটক সন্দেহভাজন ৮ জন হলেন, উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ছোট সুন্দলী গ্রামের মৃত নিতাই বিশ্বাসের ছেলে চরমপন্থী নেতা প্রজিৎ কুমার বিশ্বাস ওরফে বুলেট, সাবেক মেম্বার অর্ধেন্দু মল্লিক, নিহতের কাকা হরিশপুর গ্রামের দীপংকর সরকার, ফুলেরগাতী গ্রামের সঞ্চিত রায়, সুন্দলী গ্রামের অশোক বিশ্বাস, রামসরা গ্রামের দীপংকর মন্ডল, গাবুখালী গ্রামের সুমন, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বাদল। এলাকাবাসী ও আটকৃতদের পরিবার সূত্রে নামগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকা-ের পরের দিন মঙ্গলবার রাতে নিহত উত্তম সরকারের স্ত্রী শ্রাবন্তী সরকার অভয়নগর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই রাতে অভয়নগর থানা ও যশোর ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করেন। বুধবার (১২ জানুয়ারি) গভীর রাতে আটক প্রজিৎ কুমার বিশ্বাস ওরফে বুলেটের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সুন্দলী ইউনিয়নের ছোট সুন্দলী গ্রামে অভিযান চালিয়ে তার বাড়ি থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের ৩টি তাজা গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
অভয়নগর থানা ও যশোর ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে গুলি উদ্ধার ও সন্দেহভাজন একজনকে আটকের বিষয়ে অভয়নগর থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিলন কুমার মন্ডল জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।
তবে বিস্তারিত তথ্যের জন্য যশোর জেলা ডিবি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন তিনি। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর জেলা ডিবি পুলিশের ওসি রুপম সরকার এবং অভয়নগর থানার ওসি একেএম শামীম হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার রাতে অভয়নগর থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম শামীম হাসান জানান, একাধিক টীম তদন্তে মাঠে রয়েছে। তাই তদন্তের স্বার্থে কিছুই বলা যাবেনা। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে খুনের ঘটনা আপনাদেরকে জানানো হবে। উল্লেখ গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাতে নিজ বাড়ি ফেরার পথে অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য (মেম্বার) উত্তম সরকার। এরপর থেকে পুলিশের কয়েকটি টিম হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের আটকে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.