পাইকগাছায় শতবর্ষী আম গাছ ঘিরে সুনাম ছড়াচ্ছে শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
ইউনিয়বাসীর দাবী গাছটিকে ঘিরে সরকারি সহতায় হতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিনোদনের স্থান। পাইকগাছার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে প্রধান সড়কের পাশেই অবস্থিত সুখদা সুন্দরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯২৩ সালে তৎকালীন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বৈদ্যনাথ ঘোষের পিতা-মাতার নামে এ বিদ্যালয়ের নাম রাখেন।
বিদ্যালয় চত্তরের শত বছরের গাছটি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি সাথে। প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস শেষে মুক্ত বাতাসে তার তলায় বসে গল্প করে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া ডালগুলিতে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা দোল খায়। তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে তাদের মাঝে বিলিয়ে দেয় জ্যৈষ্ঠের পাকা আমগুলি। এ গাছটির তলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩শ বাইসাইকেল তার ছায়ার তলায় রাখে। কালের সাক্ষী শত বছরের আমগাছের সাথে জড়িয়ে থাকা ভোলানাথ সুখদা সুন্দরী বিদ্যালয়ের বয়স ৯৮ বছর। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবকাঠামো ছিল বাঁশ চটার তৈরি।
সরকার একের পর এক পরিবর্তন হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাবেক প্রয়ত সাংসদ এ্যাডঃ নুরুল হকের ভাল মনোভাবের কারণে গড়ে উঠেছে কোটি টাকা ব্যয়ে ২টি ভবন। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮শ ছাত্র-ছাত্রী, যা উপজেলার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বর্তমানে সভাপতি সমীরন কুমার সাধু বলেন, আমার আমলে উপজেলার মধ্যে প্রথমেই আমার বিদ্যালয় আধুনিক করার জন্য পরিশ্রম করছি। শিক্ষকদের গুনগত মানোন্নয়নে ডিজিটাল হাজিরা স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি শ্রেণীতে ২টি করে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক সরদার বদিউজ্জামান বলেন, অফিস কক্ষে বসে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মনিটরিং করে থাকি। গাছটির সাথে কালের সাক্ষী হিসেবে জড়িয়ে রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেদ মন্দির। জমিদার আমলে নির্মিত এ মন্দির প্রতিষ্ঠানটি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা উপাসনা করতেন।
এখানে প্রতি বছর চৈত্রের মাসের শেষ তারিখে বৈশাখী মেলা সহ চড়ক পূজা হয়ে থাকে। মন্দিরটি দেখাশুনার অভাবে নষ্ঠ হওয়ার পথে। এ গাছের সাথে আরো জড়িয়ে রয়েছে বারের পুকুর। ৮০’উর্দ্ধ ঈশা বিশ্বাস জানান, তৎকালীন সময়ে পানীয় জলের অভাবের কারণে জমিদার ভোলানাথ ঘোষ এ পুকুরটি খনন করেন। পুকুরটিতে অলৌকিক কিছু দেখা যেত বলে নাম রাখা হয়েছিল বারের পুকুর।
গদাইপুর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ জিয়াদুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়কে গড়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। শত বর্ষী গাছটি ঘিরে একটি পার্ক করার চিন্তা ভাবনা আমার রয়েছে। এ গাছটিকে ঘিরে রয়েছে উপজেলার সর্ববৃহত ফুটবল খেলার মাঠ। সবমিলিয়ে গাছটির সাথে মিলে-মিশে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, মন্দির। গাছটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের বিনোদনের পার্ক সময়ের দাবী।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.