দুর্ভোগের আরেক নাম সোনাডাঙ্গা বাইপাস|| বাইপাস সড়কে খানাখন্দ প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা||খুলনার খবর২৪
খুলনার খবর২৪||আজাদ চিশতি||নগরীর সোনাডাঙ্গা বাইপাস এলাকার সড়কটির বেহাল দশা এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে এ পথ দিয়ে চলাচলরত শতশত পরিবহন,ট্রাক,সাধারন মানুষ। বৃষ্টির পানি জমে কার্পেটিং ওঠে সৃষ্টি হয়েছে খানা খন্দ।বৃষ্টির পানি গিয়ে জমে থাকে এ খানা খন্দে, আর না বুঝেই গাড়ি চালকরা ওই গর্তের ভিতর গাড়ি নামিয়ে দিলে ঘটছে দুর্ঘটনা।
এই এলাকার একজন মুদি ব্যবসায়ি এনাম শেখ দোকানের মাল ক্রয় করে ভ্যান গাড়িতে করে নিয়ে আসছিলেন এ সময় ভ্যান ড্যাইভার না বুঝে গর্তের ভিতরে চাকা নামিয়ে দিলে ভ্যান উল্টে সব মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে যায়।এতে করে ভ্যানচালক সহ মুদি দোকানি আহত হয়।আর ক্ষতি হয় বেশকিছু টাকার মালামাল।
স্থানীয় দোকানদার আজাদ বলেন,প্রায় প্রতিদিনই এখানে কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটছে।রাস্তা খারাপ হওয়ার দরুন এলাকার দোকানদাররা তাদের ব্যবসা অন্য কোথাও সরিয়ে নিচ্ছে।সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথেই এই এলাকা শশ্মানে পরিনত হয়।লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এ সড়কের পাশে দোকান থাকায় রীতিমতো সমস্যা হয়। শুকনোর সময় ধুলো-বালিতে দোকানে টেকা দায়। আর বর্ষার সময় কাদা পানিতে ভেঙ্গে যাতায়াত করতে হয়।
বেশ কয়েকবার বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ বের হলেও নেই কোন তৎপরতা।আছে শুধু আশ্বাস। সড়কটির অবস্থা এখন এতই খারাপ যে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।স্থানীয় দোকানদার ও এলাকাবাসির দাবি অতিদ্রুত এই ব্যস্ততম সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া।
জানা যায়, শহরকে সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বাইপাস সংযোগ সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(কেডিএ)।প্রায় ২.৩৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সংযোগ সড়কটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৮ কোটি টাকা। ২০১১ সালের ৩০ মার্চ প্রথম সংশোধিত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। সড়কটির নির্মাণ কাজের টেন্ডারের আহ্বান করা হয় ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি পায় ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিয়েনকো লিমিটেড। ওয়ার্ক অর্ডার হয় ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর।আর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের ৩০ জুন।
কাজ শেষ হওয়ার কিছু দিন পরই খুলনা সিটিকরপোরেশন ও এজিইডিকে সড়কটি হস্তান্তর করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। সড়কটির মহানগরীর অংশ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) এবং বাকি অংশটির দায়িত্বে রয়েছে এলজিইডি। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সড়কটির হয়েছে বেহাল দশা। তিন কিলোমিটার সড়কের দুই কিলোমিটার জুড়েই সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানা-খন্দ। চলতি বর্ষা মওসুমে কোথাও কোথাও পানি জমে পুকুরের মতো জলাশয়ের আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় নগরীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ব্যস্ততম এই সড়কটিতে স্বাভাবিক পরিবহনসহ যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ।
বাসচালক আমজাদ বলেন, খুলনায় ঢুকতে আর বের হতে এ সড়কের তিন কিলোমিটার জায়গা পার হতে ২৫-৩০ মিনিট লেগে যায়। যা যাত্রীদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে। সড়কের প্রায় ৯০ ভাগ অংশই এখন ভাঙা। পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গেছে।পেটের দায়ে গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়। ভাঙা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে মন চায় না, কিন্তু নিরূপায় হয়ে আমাদের এ সড়কে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মোর্তুজা আল মামুন বলেন, কেডিএর নিয়মে রাস্তা সংস্কার বা মেরামতের জন্য কোনও বরাদ্দ থাকে না। সরকারও বরাদ্দ দেয় না। যে কারণে এ রাস্তাটি ২০১৩ সালে তৈরির পর সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোনাডাঙ্গা থেকে ময়ূরী ব্রিজ পর্যন্ত খুলনা সিটি করপোরেশন ও বাকি অংশটুকু এলজিইডিকে দেওয়া হয়েছে। এলজিইডি অনেকবার সংস্কার কাজ করতে চেয়েও করছে না।আর সিটি করপোরেশনও সড়কটিতে এখন পর্যন্ত কোনও কাজ করেনি।
No comments
please do not enter any spam link in the comment box.